বাংলাদেশের জনসংখ্যার পরিচিতি - Class 6 BGS Assignment 20th week



বাংলাদেশের জনসংখ্যার পরিচিতি - Class 6 BGS Assignment 20th week




জন্মহার: কোনাে নির্দিষ্ট সময়ে (সাধারণত এক বছরে) কোনাে দেশের মােট জনসংখ্যার প্রতি হাজারে যতগুলাে জীবিত শিশু জন্মগ্রহণ করে, তাকে সে দেশের জন্মহার বলে।
জলবায়ু : শীত প্রধান দেশের তুলনায় গ্রীষ্ম প্রধান দেশের জনগণের সন্তান জন্মদানের ক্ষমতা বেশি। এখানে জনগণ অল্প বয়সে সন্তান জন্মদান করতে সক্ষম হয়। তাই শীত প্রধান দেশে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কম আর গ্রীষ্ম প্রধান দেশে এই হার বেশি। 


শিক্ষা:শিক্ষার অভাবে সাধারণ মানুষ হয় অজ্ঞ, কুসংস্কারচ্ছন্ন ও রক্ষণশীল। ফলে জন্মহার বৃদ্ধির কুফল বুঝতে তারা অক্ষম হয়। জন্মহার বৃদ্ধি রােধ কঠিন হয়ে পড়ে। উন্নত দেশে শিক্ষার হার বেশি। শিক্ষিত জনগণ আয়-ব্যয় ও ভবিষ্যৎ সম্পর্কে সচেতন । থাকে, তাই তারা কম সন্তান নেয়। কাজেই শিক্ষার হার বেশি হলে জন্মহার কম হয়।


বাল্যবিবাহ ও বহুবিবাহ: কোনাে সমাজে বাল্যবিবাহ। প্রচলিত থাকলে দীর্ঘ বিবাহিত জীবনে। | জন্মহার বেশি হয়। বহুবিবাহও জন্মহার বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।


অনুন্নত জীবনযাত্রাঃ দরিদ্র মানুষের জীবনযাত্রা নিম্ন হয়। সন্তানের ভরণপােষণ, শিক্ষা, চিকিৎসা ইত্যাদিতে তাদের বেশি। অর্থ ব্যয় করতে হয় না। এ কারণে বেশি সন্তান জন্ম দিতে তারা কুণ্ঠাবােধ করে না।


নবজাতকের মৃত্যুহার : যেখানে নবজাতকের মৃত্যুহার বেশি সেখানে মা-বাবা জীবিত সন্তানের আশায় অধিক সন্তানের জন্ম দেয়। তাই নবজাতকের মৃত্যুহার বেশি হলে জন্মহারও বেশি। জন্মহার তারতম্যের প্রভাব একটি দেশের ভূমি ও অন্যান্য প্রাকৃতিক সম্পদের তুলনায় যদি জন্মহার বেশি হয় তাহলে দেশটির ভূমি ও প্রাকৃতিক । সম্পদের উপর চাপ বাড়বে। মানুষের বাড়তি চাহিদা সৃষ্টি হবে।
আবার বাড়তি চাহিদা বিভিন্ন সমস্যা সৃষ্টি করে। যেমন, দেশের | জাতীয় আয় কমে যায়। খাদ্য ঘাটতি, দারিদ্র্য, কর্মসংস্থানের অভাব, শিক্ষা ব্যবস্থার সমস্যা, পরিবেশগত ভারসাম্যহীনতা প্রভৃতি সমস্যা দেখা দেয়। জীবনযাত্রার মান হয় নিম্ন। মানুষ বিভিন্ন রােগে আক্রান্ত হয়।


মৃত্যুহার : জনসংখ্যা পরিবর্তনের একটি উপাদান বা নিয়ন্ত্রক হল মরণশীলতা বা মৃত্যুহার। একটি নিদিষ্ট সময়ে যে জনসংখ্যার মৃত্যু হয়, তার হার কে মৃত্যুহার বলে। ভৌগােলিক কারণ ও 
ভৌগােলিক অবস্থানঃ যেসব দেশ বা এলাকার অবকাঠামাে, যােগাযােগ ও পরিবহন ব্যবস্থা উন্নত এবং আবহাওয়া ও জলবায়ু চরমভাবাপন্ন নয় সেসব


প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও দুর্ঘটনা : যেসব স্থানে বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ যেমন- বন্যা, টর্নেডাে, ঘূর্ণিঝড়, খরা, দুর্ভিক্ষ, মহামারী প্রভৃতি বেশি সেসব স্থানে মৃত্যুহার বেশি। আবার যেসব এলাকার যাতায়াত ব্যবস্থা ত্রুটিপূর্ণ বা বিভিন্ন নির্মাণ কাজে সাবধানতা 
অবলম্বনের অভাব রয়েছে। | সেসব এলাকাতে দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যুহার বেশি।


বিভিন্ন রােগ-ব্যাধিঃ যেসব এলাকায় কলেরা, টাইফয়েড, ম্যালেরিয়া, হুপিংকাশি, হাঁপানি ও বিভিন্ন ভাইরাসজনিত | রােগের (যেমন-জিকা ভাইরাস, ইবােলা ভাইরাস, মার্কস
ভাইরাস করােনা ভাইরাস ইত্যাদি) প্রকোপ বেশি সেসব এলাকায় মৃত্যুহার বেশি। |


বয়সঃ বয়স কাঠামাে মৃত্যুহারকে প্রভাবিত করে। যে সমাজে অল্প বয়সী (শিশু) ও অধিক বয়সী (বৃদ্ধ) লােক বেশি, সে সমাজে মৃত্যুহার বেশি।


দারিদ্রঃ দরিদ্র জনগণ পুষ্টিসম্মত খাবার খেতে পারে। উন্নত স্বাস্থ্যসেবাও নিতে পারে না। জীবনযাত্রার মান থাকে না। ফলে বিভিন্ন ধরনের রােগব্যাধি সহজেই তাদেরকে আক্রমণ করে এবং মারাও যায় বেশি।


যুদ্ধ-বিগ্রহঃ বিশ্বের যেসব দেশে যুদ্ধ-বিগ্রহ বেশি সেসব দেশে মৃত্যুহার বেশি। বর্তমানে মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বেশ কিছু এলাকায়। যুদ্ধবিগ্রহের কারণে প্রচুর। লােক মারা যাচ্ছে।


মৃত্যুহার এর তারতম্যের প্রভাব শিশুমৃত্যু, দুর্ঘটনাজনিত মৃত্যুসহ নানা ধরনের অপরিণত বয়সের মৃত্যু দেশের অর্থনীতি ও সামাজিক জীবনের ব্যাপক ক্ষতি করে। উচ্চ শিশু মৃত্যুহারের কারণে মা-বাবা আরও বেশি সংখ্যক ছেলে-মেয়ে জন্মদানে উৎসাহিত হয়। মৃত্যুহার বেশি। হলে ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তা বেড়ে যায়। পরিবারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তির মৃত্যুতে জীবনে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়। | মােটকথা অধিক মৃত্যুহার যে কোনাে দেশের জন্য খারাপ ফল বয়ে নিয়ে আসে। অন্যদিকে নিম্ন মৃত্যুহার জনসংখ্যার গঠন, বয়স, বণ্টন ও আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অবদান রাখতে। সহায়তা করে।


















Post a Comment

Please Select Embedded Mode To Show The Comment System.*

Previous Post Next Post

Contact Form